বছরে তিন লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন

দেশে প্রতিবছর তিন লাখেরও বেশি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং প্রায় এক লাখ রোগী মারা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।  বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, তামাক, দূষণ, অনিরাপদ খাদ্যাভাসের কারণে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এ বিষয়ে জনসচেতনা ও চিকিৎসাসেবার মান বাড়াতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ক্যান্সার রোগ চিকিৎসার পরিধি বৃদ্ধি, সহজলভ্য ও মনোন্নয়নে সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।  ক্যান্সার চিকিৎসার ওধুধ ও কেমোথেরাপি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনামূল্যে রোগীদের দিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে বিশেষ অনুদান দেওয়া হচ্ছে।

মন্ত্রী জানান, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য অত্যাধুনিক রেডিওথেরাপি চিকিৎসার আধুনিক নতুন মেশিন ইতোমধ্যেই সংযোজন করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে মহিলাদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য কয়েকটি ব্রাকিথেরাপি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ক্যান্সার চিকিৎসা আরো আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের জন্য সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে।

সংসদ সদস্য বেগম মাহজাবিন খালেদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ওষুধের অনিয়ম প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিদ্যমান ওষুধ আইনকে আরো যুগোপযোগী ও কঠোর শাস্তির বিধান রেখে প্রস্তাবিত ওষুধ আইন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ওষুধের অনিয়ম প্রতিরোধ ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের জনবল বৃদ্ধির ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি জানান, বর্তমান সরকার ভেজাল, নকল ও মানহীন ওষুধ বিক্রি বন্ধে দেশের বিভাগীয় শহরসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মডেল ফার্মেসি ও মডেল মেডিসিন শপ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে ঢাকাসহ সারাদেশে ৩৯৫টি ফার্মেসিকে মডেল ফার্মেসি ও মডেল মেডিসিন শপ হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।  মডেল ফার্মেসি ও মডেল মেডিসিন শপ থেকে জনগণ মানসম্মত ওষুধ কেনার পাশাপাশি ওষুধের ব্যবহারবিধি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবে। দেশব্যাপী মডেল ফার্মেসি ও মডেল মেডিসিন শপ প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সংসদ সদস্য আবদুল মতিনের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম জানান, উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিতে বিভিন্ন অপারেশনাল প্লানের অধীনে সরকারিভাবে এবং সরকারি ব্যয়ে ডাক্তারদের বিদেশে পাঠানোর সুযোগ রয়েছে। বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে বেতন-ভাতাদি দেশীয় মুদ্রায় প্রাপ্য হবেন। গত এক বছরে আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে ৪৪৭ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।