আমি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে চাই: এম তারিক হাছিব।

আমি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে চাই!

লিখেছেন  এম তারিক হাছিব। 

বর্তমান সময়ে মানুষ পাগলের মত ছুটচ্ছে বাঁচার আশায়। তাঁরা মৃত্যুর ভয়ে কতনা আকুতি করছে। সোজাসাপটা হিসাব ১০০ বছর আগে কি তোমার অস্তিত্ব ছিল এই ধরাধামে, আবার ঠিক ১০০ বছর পরে তোমার কোন অস্তিত্ব থাকবে কি এই সুন্দর বসুন্ধরায় হে মানুষ? নিজেকে একটি প্রশ্ন কর কেন তোমার এই আগমন ও প্রস্থান হে সৃষ্টির সেরা জীব? কোন মায়ায় কিংবা কোন বন্ধনে তোমার আগমন ও প্রস্থানের কথা ভুলে যাওয়া? ধরো তুমি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছো, এবার আসো হিসেবটা মিলিয়ে নেই কে তোমার আপন? বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরী তরুণী বন্ধু, কর্মস্থলের বস, প্রিয়তম স্ত্রী, প্রান প্রিয় মা- বাবা, সহোদর ভাই-বোন এবং দূরের কোন বন্ধু যাকে বেশ পছন্দ কর? কে? কে? তোমার সারথি হবে বন্ধু? এটাতেতো একমত তোমার পূর্নতা হবে পরম পাথেয়। আসো আরেকাটা হিসাব করি বিজ্ঞান বলে পৃথিবীর বয়স নাকি ৫০০০ হাজার বছরের বেশি। সংখ্যাটা আমার ভুলও হতে পারে তর্কের সার্থে মেনে নিলাম এটাই। আমি অতদূর যাব না দের হাজার বছর আগ থেকে বর্তমানের একটি দলীল পেশ করব, দের হাজার বছর আগে আরবে “মুহাম্মাদ” (সাঃ) নামে যিনি আকাশের এক ঐশীবানী নিয়ে নিয়ে আসছিল সেখানে বলা হয়েছে “প্রত্যেক প্রানীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে” কেনম হয়ে গেল কথাটাতো শতভাগ সত্যি হচ্ছে! কি অদ্ভুত! আর একটা দলীল বর্তমানের বিজ্ঞান ১৫০০ হাজার বছর আগে এত উন্নত ছিলনা, তখন সেই ঐশীবানীতে বলা হয়েছে “তোমরা কোন কোন দানকে অস্বীকার করবে, দুটি সমুদ্রকে পরস্পর মিলিত হতে দিয়েছি, তা সত্ত্বেও উভয়ের মধ্যে একটি পর্দা আড়াল হয়ে আছে যা তারা অতিক্রম করে না ” অর্থাৎ কিছুদিন আগে বিজ্ঞান আবিস্কার করল সমুদ্রে একটি জায়গায় আছে যেখানে মিঠা পানি ও লবণ পানির পাশা-পাশি স্রোত রয়েছে যা একটি আরেকটির সাথে মিলে না। কি অদ্ভুত! এটা কিভাবে সম্ভব! এটা কেমন ঐশীবানী বর্তমানে বিজ্ঞান যা আবিস্কার করে তা ১৫০০ হাজার বছর আগেই বলে দিয়েছে। কোথাও যেন একটা ব্যাপার আছে। কি সেই রহস্য! আসো মৃত্যুকে নিয়ে কথা বলি ঐশীবানী বলেছে “প্রত্যেক প্রানীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে” তাইতো হচ্ছে কেউ আগে ও পরে। এটাতো নিশ্চিত তুমি ও আমি মৃত্যুবরণ করবই। মৃত্যু হবে বলে সব কিছু ছেড়ে দিয়ে বসে থাকার কথা আমি বলছি না। আমি এক সাফল্যের মৃত্যুকে চাই, কেননা আমি মৃত্যুর পরবর্তী জীনবকে বিশ্বাস করি। আসুন আরোকিছু দলীল দেখি”

-★সূরা আহযাব-৯
আর তারপর আমি তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলাম এক ঝঞ্ঝা বায়ু এবং এক বাহিনী । এমন এক বাহিনী যা তোমরা চোখে দেখতে পাওনি ।
-সূরা আন‌আম-৪২
তারপর আমি তাদের উপর রোগব্যাধি, অভাব, দারিদ্র্য, ক্ষুধা চাপিয়ে দিয়ে ছিলাম, যেন তারা আমার কাছে নম্রতাসহ নতি স্বীকার করে ।
★সূরা ইয়াসীন-২৮-২৯
তারপর ( তাদের এই অবিচার মূলক জুলুম কার্জ করার পর ) তাদের বিরুদ্ধে আমি আকাশ থেকে কোনো সেনাদল পাঠাইনি । পাঠানোর কোনো প্রয়োজন‌ও আমার ছিল না । শুধু একটা বিস্ফোরণের শব্দ হলো, আর সহসা তারা সব নিস্তব্ধ হয়ে গেল ( মৃত লাশ হয়ে গেল )
★সূরা আ’রাফ-১৩৩
অবশেষে আমি তাদের ওপর দুর্যোগ পাঠালাম,পংগপাল ছেড়ে দিলাম, উকুন ছড়িয়ে দিলাম, ব্যাঙের উপদ্রব সৃষ্টি করলাম এবং রক্ত বর্ষণ করলাম। এসব নিদর্শন আলাদা আলাদা করে দেখালাম। কিন্তু তারা অহংকারে মেতে রইলো এবং তারা ছিল বড়ই অপরাধ প্রবণ সম্প্রদায়।
★সূরা বাকারা-২৬
নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মশা কিংবা এর চাইতেও তুচ্ছ বিষয় ( ভাইরাস বা জীবাণু ) দিয়ে উদাহরণ বা তাঁর নিদর্শন প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না ।
-সূরা আ’রাফ-৯৪
ওর অধিবাসীদেরকে আমি দূঃখ, দারিদ্র্য রোগ-ব্যধি এবং অভাব-অনটন দ্বারা আক্রান্ত করে থাকি । উদ্দেশ্য হলো তারা যেন, নম্র এবং বিনয়ী হয় ।
★সূরা মুদ্দাসসির-৩১
তোমার “রবের” সেনাদল বা সেনাবাহিনী ( কত প্রকৃতির বা কত রূপের কিংবা কত ধরনের ) তা শুধু তিনিই জানেন ।
-★সূরা আন’আম-৬৫
তুমি তাদের বলঃ যে আল্লাহ্ তোমাদের ঊর্ধ্বলোক হতে বা উপর থেকে এবং তোমাদের পায়ের নিচ হতে শাস্তি বা বিপদ পাঠাতে পূর্ণ সক্ষম ।
★সূরা আ’রাফ-
তারপর আমার ভূমিকম্প তাদেরকে গ্রাস করে ফেললো । ফলে তারা তাদের নিজেদের গৃহেই মৃত অবস্থায় উল্টো হয়ে পড়ে রইল ।
★সূরা কামার-৩৪
তারপর আমি এই সম্প্রদায়ের ওপর প্রেরণ করেছিলাম প্রস্তর বর্ষণকারী এক প্রচন্ড ঘুর্ণিবায়ু ।
★সূরা ইউনুস-১৩
অবশ্যই আমি তোমাদের পূর্বে বহু জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি, যখন তারা সীমা অতিক্রম করেছিলো।
★সূরা সাবা-১৬-১৭
তারপর প্রবল বন্যার পানি তৈরি করলাম এবং ফসলি জমিগুলো পরিবর্তন করে দিলাম। অকৃতজ্ঞ অহংকারী ছাড়া এমন শাস্তি আমি কাউকে দিই না ।
★সূরা বাকারা-১৫৫
আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা, জান-মালের ক্ষতি এবং ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে পরীক্ষা করব । তবে তুমি ধৈর্যশীলদেরকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও ।

কেমন যেন একটি শিহরণ হলো নিজের মধ্যে! এ কেমন ঐশীবানী। ভাবুন ও ভাবতে থাকুন কার এশক্তি। হিসেব মিলিয়ে পথ বেছে নিন। যারা এখনো বেহিসেবী অলস অর্থ জমা করে আছো ছেড়ে দাও তোমার প্রয়োজন অতিরিক্ত। কতমানুষ এখনো পেটভরে খাবার খায়না।আমার ভয় হয় সাধারণ আয়ের মানুষ না খেয়ে মারা যেতে পারে অনেকে কেননা তাদের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। করোনার জন্য কত মানুষ আহাজারি করে দেখ এই ভূখণ্ডে। কি হবে উঁচু দালান দিয়ে আজ সন্ধ্যায় তোমার মৃত্যু হয় যদি। যারা দল করে করে বহুমানুষেকে বন্দী করে রেখেছ জেলে কি লাব হবে এখনো উল্টো পথে হেঁটে। দেখ পুরো পৃথিবীর ১৭০কোটি মানুষ আজ জেলের ন্যায় বন্দী নিজ বাসগৃহে। কোথায় তোমাদের রঙিন প্লাটফর্ম যেখানে গিয়ে তুমি ড্রিংক করে নিয়ন আলোয় মেতে থাকতে নগ্ন নারীর শরীরে। সব ফাকা আজ।নিরব নিস্তব্ধতায় পূর্ন। আজ সব আস্তিক – নাস্তিক ভয়ে একাকার যদি করোনা হয়ে যায় তবে আমিতো শেষ। আহারে আহাজারি, আহারে চাপা কষ্ট। কেউ কেউ বলে করোনা চীনের মরন নাশক ভাইরাস সৃষ্টি যাইহোক, পারমাণবিক অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র কি হবে এসব করে। একটা সময় পৃথিবীর সমস্ত ভূখণ্ড পরে থাকবে কিন্তু থাকবে না ভোগ করার মানুষ।আসুন আর নয় ব্যবধান হাতে হাত রেখে সৃষ্টিকর্তার নিয়ম মেনে সকল মানুষ বসবাস করি পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় হাসিখুশিতে। যেহেতু আমি পুনরুত্থানে বিশ্বাসী তাই আমার মৃত্যু চাই শহীদের ন্যায় অথবা মহা মনিবের নিকট সিজদা অথবা রুকু অবস্থায়। এই আমার কামনা এই আমার বাসনা। আমি আমার মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে চাই এই উপায়ে। যে মৃত্যু হবে আনন্দের, যে মৃত্যু হবে সাফল্যের।

এম তারিক হাছিব
২৬/০৩/২০২০