ওষুধ শিল্প ও স্বাস্থ্যসেবার অগ্রগতির স্বার্থে ফার্মাসিস্টদের দিকে নজর দিন।

বিডিনিউজ এক্সপ্রেসঃ ফার্মাসিস্টগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন ওষুধ উৎপাদনে। বাংলাদেশের হাসপাতালে ডাক্তারদের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও ফার্মাসিস্টগণ অনুপস্থিত নেই ওষুধ উৎপাদনে। সরকারি ফার্মাসিউটিক্যাল এসেনশিয়াল ড্রাগস কম্পানি লিমিটেডসহ অন্যান্য ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানির ফার্মাসিস্টগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যাচ্ছে শুধু ডাক্তারদের অবদানের কথা। ফার্মাসিস্টদের নাম নেই পত্রিকার শিরোনামে। নেই সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিদের মুখেও।

এই দুঃখ নিয়ে কথা বলি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব মো. আসাদুল ইসলাম স‍্যার ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ স‍্যারের সাথে। মাননীয় সচিব স‍্যার ও ডিজি স‍্যারকে বলি, আমরা জানি এই করোনাভাইরাসের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকদের অবদান অনেক কিন্তু ফার্মাসিস্টদের অবদানও কম নয়। তাই চিকিৎসকদের পাশাপাশি ফার্মাসিস্টদের কথাও একটু গণমাধ্যমে প্রকাশ করুন। তারা কাজে উৎসাহিত হবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয় উপেক্ষা করে ফার্মাসিস্টগণ ওষুধ উৎপাদন করে যাচ্ছেন।

উভয়ই আমাকে আশ্বস্ত করে বলেন, আমি ফার্মাসিস্টদের অবদানের কথা শিকার করি এবং অবশ্যই তা প্রকাশ করব। দেশের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে ফার্মাসিস্টদের যুক্ত করার বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রণোদনা বাজেট এর কিছু অংশ ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানিতে কর্মরত বিভিন্ন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও উৎপাদন শ্রমিকদের মাঝে ঝুঁকি ভাতা হিসেবে প্রদান করার জন্য অনুরোধ করি। সাস্থ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব মোঃ আবুল কালাম আজাদ স্যার বিষয়টি অনুধাবন করতে পারেন এবং গতকাল ১৬/০৪/২০২০ তারিখ এইইডিসিআর এর ব্রিফিং এ ফার্মাসিস্টদের ও ফার্মাসিউটিক্যাল এর অবদান এর কথা স্বীকার করে ফার্মাসিস্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আজ আমরা অনুপ্রাণিত। ফার্মাসিস্টদের প্রতি তাদের এই সহযোগিতা অব্যাহত থাগবে আশাকরি।

দেশে পর্যাপ্ত নিবন্ধনপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট রয়েছে তাদেরকে সঠিকভবে কজে লাগাতে পারলে স্বাস্থ্যসেবার মান আরো সমৃদ্ধ ও নিরাপদ হতো। আজকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইন্ডিয়ার কাছে ওষুধ এর জন্য সাহায্য চেয়েছেন। কিন্তু এই সাহায্য বাংলাদেশের কাছে চাইলে খুশি হতাম। কারণ ওষুধ রপ্তানিতে বাংলাদেশের সকল ধরনের সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্টদের দিয়ে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের কাজ চালিয়ে দিচ্ছেন এবং হাসপাতালে নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে উন্নত বিশ্বে ফার্মাসিস্ট বলতে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদেরকেই বুঝায়।

করোনাভাইরাসের ওষুধ উৎপাদন নিয়ে বিভিন্ন কম্পানি নিজেদের মতো করে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু এখানে সরকারি সমন্বয়ের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক অধ্যাপক বা সহকারী অধ্যাপক আছেন; যারা ড্রাগ ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছন, তাদেরকে কাজে লাগানো যায। বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানির সাহায্য নিয়ে করোনাভাইরাসের ওষুধ আবিষ্কারে গবেষণা চালিয়ে যাওয়া যায়।

মুন্সিগঞ্জে নির্মাণাধীন ‘অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) শিল্প পার্ক’র নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করা উচিত। কারণ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এভাবে আমদানি বন্দ থাকলে ওষুধ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। তাই বলি বাংলাদেশে ওষুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে বিজ্ঞানীদের প্রতি সরকারি নজরদারি বাড়াতে হবে। তবেই স্বাস্থ্য খাত পরিপূর্ণতা পাবে।

লেখক:
মো. আজিবুর রহমান (এম ফার্ম, এমবিএ, পিজিডি এইএম)।