উইলিয়াম শেকক্সপিয়র এর বিখ্যাত ট্রাজেডি “হ্যামলেট” থেকে লেখা”Frailty! thy name is woman.”

এম আই প্রধান (মুকুল) এর উইলিয়াম শেকক্সপিয়র এর বিখ্যাত ট্রাজেডি “হ্যামলেট” থেকে লেখা।

“Frailty! thy name is woman.”

বিখ্যাত কবি,নাট্যকার উইলিয়াম শেকক্সপিয়র এর বিখ্যাত ট্রাজেডি “হ্যামলেট” থেকে নেয়া অতি পরিচিত একটি উদ্ধৃতি এটি। নাটকের মূল নায়ক হ্যামলেটের অতি সুন্দরী মা গারট্রুডকে ভালবেসে ফেলে তারই আপন চাচা ক্লডিয়াস।ভাবীকে সারাজীবনের জন্য একান্তভাবে পেতে হ্যামলেটের চাচা ক্লডিয়াস এবং হ্যামলেটের মা গারট্রুড (হ্যামলেটের মা খুনী হিসেবে সন্দেহজনক) হ্যামলেটের বাবাকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করে। বাবাকে হত্যার মাত্র দেড় মাস যেতে না যেতেই যখন হ্যামলেটের মা,চাচা ক্লডিয়াসকে বিয়ে করে সংসার শুরু করে দেয়; তখন হ্যামলেট বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারেনা। মনের দু:খে মাকে উদ্দেশ্য করে হ্যামলেট উপরিল্লিখিত “Frailty! thy name is woman-ছলনার অপর নাম নারী” বিখ্যাত উক্তিটি করেন।
হ্যামলেটের চাচা ক্লডিয়াস আসলেই তার পিতার হত্যাকারী কিনা তা প্রমান করতে হ্যামলেটের বাবাকে যেভাবে কানে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয় ঠিক সেভাবেই হত্যার অনুরূপ ঘটনা সাজিয়ে হ্যামলেট একটি ছোট মঞ্চ নাটকের আয়োজন করেন। মূল হত্যাকারী তার চাচা ও হ্যামলেটের মা’কেও সেখানে নাটকটি দেখতে উপস্থিত রাখা হয়।
মূল নাটকে যেভাবে হ্যামলেটের বাবাকে হত্যা করা হয়েছিল এই ছোট নাটকের মাধ্যমে সেই একই ঘটনা একইভাবে ফুটিয়ে তুলে হ্যামলেট সেই হত্যার দৃশ্যে চাচা ক্লডিয়াসের অনুভুতি লক্ষ্য করেন।
যাইহোক,শেষমেশ হ্যামলেটের ধারনাই সত্যি হয়। নাটকে রাজাকে বিষ প্রয়োগে হত্যার দৃশ্য দেখে ক্লডিয়াস অস্বস্তিবোধ করে ভীষণ রাগত ভাবে মঞ্চ ছেড়ে দ্রুত পায়ে চলে যায়।তার এই আচরণ দেখে হ্যামলেটও নিশ্চিত হয়ে যান তার বাবার হত্যা নিয়ে।
এই যে নাটকের ভেতরেই আরেকটি নাটক হলো এটিকে বলে “Drama within Drama”। এই ‘ড্রামা উইদিন ড্রামা’ ব্যাপারটি ঘটে ইংরেজি সাহিত্যের আরো একজন বিখ্যাত লেখক Thomas Kyd এর বিখ্যাত নাটক “The Spanish Tragedy” নাটকেও।সেটিও খুব মজার ঘটনা।সময় হলে সে ঘটনা আরেকদিন বলবো।
যাইহোক,বাবার প্রকৃত হত্যাকারীকে চিনবার পর থেকে হ্যামলেট তার বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।এভাবেই একবার চাচা ক্লডিয়াসকে হত্যার দারুন এক সুযোগ পেয়ে যায় হ্যামলেট।ঘটনার সময় ক্লডিয়াস তার রুমে একাই ছিলেন। হ্যামলেট তরবারি নিয়ে রুমে প্রবেশ করে দেখে ক্লডিয়াস প্রার্থনায় আছেন। হ্যামলেট কি করবেন ভেবে পাননা, দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েন।হ্যামলেট মনে করেন, প্রার্থনারত অবস্থায় ক্লডিয়াস কে হত্যা করলে সে হয়তো স্বর্গে চলে যাবে।এতে হ্যামলেটের বাবার আত্মা শান্তি পাবেনা। কি করবে হ্যামলেট বুঝতে পারেনা।সুযোগ পেয়েও বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে না পেরে হ্যামলেট নিজে নিজে মনে মনে বলতে থাকেন–
“To be or not to be that is the question,
………………against a sea of trouble.”
(নোটঃ মনে মনে বলা কথাগুলো মঞ্চে উচ্চস্বরে বলতে হয় যাতে দর্শক বুঝতে পারে।এই মনের কথাকে দর্শকের উদ্দেশ্যে একা একা Loudly বলাকে ইংরেজি সাহিত্যে বলা হয় “Soliloquy”।যেমন,To be or not to be…হচ্ছে একটি বিশুদ্ধ Soliloquy.অন্যদিকে, Thy অর্থ হচ্ছে তুমি বা তোমার। Frailty! thy name…বলে frailty কে যেভাবে তুমি বলা হয়েছে এই প্রাণহীন একটি শব্দকে তুমি বলে সম্বোধন করাকে ইংরেজি সাহিত্যের Literary terms এর ভাষায় বলা হয় Personification.)
প্রকৃতপক্ষে, হ্যামলেটের এই দ্বিধা আমাদের প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রেই সার্বজনীন এক দ্বন্দ্ব।আমরা প্রত্যেকেই জীবনের নানা ক্ষেত্রে,নানা জরুরি প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আমাদের সামনে দুটি পথ চলে আসে।কেউ সঠিক পথেই যায়, আবার কেউ ভুল পথ বেছে নিয়ে জীবনভর পস্তাতে থাকে।

লেখকঃ এম আই প্রধান (মুকুল) , পাবলিক রিলেশন অফিসার, মাননীয় মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

তারিখঃ ১০/০৩/২১