বিডিনিউজ এক্সপ্রেসঃ বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরাম আজ ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস পালন করেছে। এ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন ডক্টর সিতেশ চন্দ্র বাছার।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং ফার্মেসি অনুষদের প্রাক্তন ডিন অধ্যাপক আ ব ম ফারুক।
অনুষ্ঠানে বক্তারা স্বাস্থ্যসেবার অগ্রগতিতে সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশের ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা তুলে ধরেন এবং সকল হাসপাতালে অন্তত দুজন গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টকে হাসপাতাল ফার্মাসিস্ট হিসেবে নিয়োগ বাধ্যতামূলক করার জোর দাবি জানান। এর আগে বাংলাদেশ ফার্মাসিস্টস্ ফোরামের নেতৃবৃন্দ সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা জনাব এম এম আমিনুল ইসলামের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বর্ণাঢ্য র্যালী নিয়ে ধানমণ্ডি থেকে প্রেসক্লাব চত্বরে পৌছায়।
এরপর প্রেসক্লাবে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান, প্রফেসর ড. ফিরোজ আহমেদ এবং ফার্মেসি গ্র্যাজুয়েটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইসতিয়াক আহমেদ, ডা. বনি আমিন অপু, পরিচালক মেডিএইম এবং বাংলাদেশ ফার্মাসিস্টস্ ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা এম আমিনুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জনাব হারুন অর রশীদ, সভপতি, বাংলাদেশ ফার্মাসিস্টস্ ফোরাম এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ সৈকত এছাড়াও বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনটির সিনিয়র সহসভাপতি আজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান তানভীর ও ফোরামের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা ফার্মাসিস্টদের যোগ্য মর্যাদার ঘাটতি তুলে ধরে দুঃখ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, উন্নত বিশ্বের হাসপাতালগুলোতে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা বহির্বিভাগ, জরুরী বিভাগসহ সকল বিভাগ এমনকি ওয়ার্ডেও চিকিৎসক এবং নার্সদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেন। কিন্তু এখানে ১৯৬৫ সালে ফার্মেসি শিক্ষা চালু হলেও আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রকৃত হাসপাতাল ফার্মাসিস্ট (গ্র্যাজুয়েট) চালু হয়নি। ফলে দেশের রোগীরা ওষুধ পাচ্ছে ঠিকই; কিন্তু তারা ভুল ব্যবহার, সঠিক ডোজের অভাবসহ নানা সমস্যায় পড়ছেন।
তারা দাবি করেন, ভুল ওষুধ সেবনে এদেশে রোগী মৃত্যুরও বেশ কিছু ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, ২০১৬ সালের ওষুধ নীতিতে স্পষ্ট করে লিখা আছে ওষুধের উৎপাদন, নিয়ন্ত্রণ, সরবরাহ সকল ক্ষেত্রে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট রাখতে হবে। এছাড়া হাসপাতালে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে, ওষুধ প্রশাসনেও ফার্মাসিস্ট দিয়ে তদারকির কথ বলা হয়েছে। ২০১৮ সালের বাংলাদেশ গ্যাজেটে স্পষ্ট করে তিন স্থানে মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতালে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টের পোস্ট দেওয়া হয়েছে। রোগীর জন্য নিরাপদ ওষুধ, নিরাপদ ওষুধের ব্যবহার এবং তার তদারকি করাই হাসপাতাল ফার্মাসিস্টের দায়িত্ব।
বক্তারা দাবি করেন, ওষুধের নিরাপদ ব্যবহার, খরচ নিয়ন্ত্রণ ফার্মাসিস্টদের হাতে থাকলে সরকারের যেমন ওষুধ অপচয় কমবে, তেমনি সঠিক ওষুধ সঠিক নিয়মে পাবে। পাশাপাশি ওষুধের মানও ঠিক থাকবে, ভুল ওষুধে মৃত্যুর মতো ঘটনা বা বড় ধরনের বিপদ থেকে অনেক রোগী নিরাপদ থাকবে, ডাক্তারদের কাজে গতি আসবে- কারণ ফার্মাসিস্ট তার কাজটি করলে চিকিৎসকের কাজ কিছুটা সহজ হয়ে যাবে।
তারিখঃ ২৫/০৯/২২