বিডিনিউজ এক্সপ্রেসঃ বাংলাদেশ সরকারের সরকারি চাহিদার শত ভাগ ওষুধ সরবরাহ করার লক্ষে কাজ করছে ইডিসিএল। সারা বাংলাদেশের সকল সরকারি হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক, বাংলাদেশ আর্মিতে ঔষধ সরবরাহ, দেশের বাহিরে গভর্নমেন্ট টূ গভর্মেন্ট ঔষধ রপ্তানি থেকে শুরু করে সকল ধরনের সরকারি ঔষধ সরবরাহ করে থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের একমাত্র সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড। ইডিসিএল সকল হাসপাতাল এবং কমিটি ক্লিনিকে ঔষধ সরবরাহ করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র উৎপাদন খরচ এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনা খরচ নিয়ে নামমাত্র মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করে থাকেন।
ইডিসিএল বাৎসরিক প্রায় ১০০০ কোটি টাকার ঔষধ উৎপাদন করে থাকেন। যাহার প্রাইভেট কোম্পানির ওষুধের বাজারের মূল্যের সাথে তুলনায় করলে প্রায় অর্ধেকের চাইতেও কম । তাই প্রাইভেট কম্পানির সাথে তুলনা করলে ইডিসিএল এর বাৎসরিক বিক্রি প্রায় ২০০০ কোটি টাকা। ইডিসিএল ঢাকা প্ল্যান্ট, বগুরা প্ল্যান্ট, খুলনা প্ল্যান্ট, গোপালগঞ্জ প্লান্টে এবং মধুপুর প্লান্টে এই ঔষধ উৎপাদিত হয়ে থাকে। এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড এর মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ এহ্সানুল কবির জগলুল এই ঔষধ উৎপাদন থেকে শুরু করে হাসপাতালে সরবরাহ করার সকল কাজ পরিচালনা করে থাকেন।
অধ্যাপক ডাঃ এহ্সানুল কবির জগলুল বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে হাসপাতাল গুলোতে শতভাগ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সামগ্রী ও লার্জ ভলিউম প্যারেন্টারাল স্যালাইন সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী এসেনশিয়াল ড্রাগকে আধুনিক করার উদ্যোগ নেন।
এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড সরকারি চাহিদার ৯০ ভাগ ওষুধ সরবরাহ করে আসছে। এর মধ্যে সেফালোস্পোরিন, মেরোপেনাম, পেনিসিলিন সহ সকল ধরনের এন্টিবায়োটিক, গ্যাস্টিকের ওষুধ, ইনজেকশন, কোলেস্টেরল কমানোর ঔষধ এ্যাটোরভাস্টাটিন, পেইন কিলারসহ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের চোখের ড্রপ, অয়েন্টমেন্ট, লিকুইড সলিউশন, সাসপেনশন। গোপালগঞ্জে প্লান্টে উৎপাদিত হতে যাচ্ছে জীবন রক্ষাকারী লার্জ ভলিউম প্যারেন্টারাল স্যালাইন।
ইডিসিএল আজ সম্পূর্ণ নতুন, ডিজিটাল, অত্যাধুনিক এবং কয়েকগুণ বেশি উৎপাদন সক্ষমতা সম্পূর্ণ এক নতুন এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে (ইডিসিএল) রূপান্তরিত হচ্ছে। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত এসেনসিয়াল ড্রাগের ওষুধ তৈরির অবকাঠামোটি অনেক পুরনো। এখন আধুনিক পদ্ধতিতে ওষুধ তৈরির সব কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য প্রায় ২০০০ কোটি টাকায় ঢাকা কাড়খানা মানিকগঞ্জে স্থান্তর করা হচ্ছে। এই লক্ষে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন অবকাঠামো তৈরির জন্য ৩১শত একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে মানিকগঞ্জে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় এখানে সব ধরনের ওষুধ তৈরি করা হবে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক কারখানার অবকাঠামো তৈরির জন্য দিয়েছে ২৫০ কোটি ডলার এবং সরকার দিয়েছে ৫০ কোটি ডলার। এই অবকাঠামো স্থাপনের কাজটি করবে ফিনল্যান্ডের কোম্পানি ইল্যুম্যাপিক।
প্রায় ৪০০০ কোটি টাকায় ভ্যাক্সিন উৎপাদন কারখানা, ঔষধ গবেষণাগার হচ্ছে গোপালগঞ্জে। ভ্যাকসিন প্ল্যান্টটি তৈরি করবে ফিনল্যান্ডের ওই কোম্পানি। সরকারি দরপত্রে অংশগ্রহণ করে তারাই প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। করোনা ভ্যাকসিনসহ যে কোন ভাইরাসের ভ্যাকসিন এখানে তৈরি করার সক্ষমতা থাকবে। ভ্যাক্সিন উৎপাদন কারখানার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ইতিমধে সম্পূর্ণ হয়েছে।
প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে ঔষধ উৎপাদন বাড়বে অনেক গুণ। এর সুবিধা পৌঁছে যাবে সারা বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। যেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহের সমন্বয় এর মাধ্যমে নিশ্চিত হবে স্বাস্থ্য সেবা।
তারিখঃ ২৮/১১/২২/এ আর